শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

হাসিনার সম্পদের হিসাবে গরমিল: ব্যবস্থা নিতে ইসিকে দুদকের চিঠি

আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ০৭:২০ পিএম

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাখিলকৃত হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’-এর আওতায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হলফনামায় দাখিল করা সম্পদ বিবরণী ও তার আয়কর বিবরণীতে সম্পদের হিসাব গরমিল পাওয়ায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। একইসঙ্গে এই অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনার অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

ইসি বরাবরে পাঠানো চিঠিতে দুদক জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে হলফনামার মাধ্যমে দাখিলকৃত সম্পদ ও দায়ের বিবরণীতে তার নিজ নামে অর্জিত কৃষি জমির পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ একর উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ক্রয়কৃত জমির অর্জনকালীন আর্থিক মূল্য দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু সমসাময়িক সময়ে তার কর্তৃক দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের নিজ নামে অর্জিত ২৮ দশমিক ৪১১ একর জমির তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে তার ক্রয়কৃত জমির মূল্য ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা। তদনুযায়ী তিনি হলফনামায় ২১ দশমিক ৯১ একর জমির তথ্য গোপন করেছেন এবং ক্রয়কৃত জমির মূল্য ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০ টাকা কম দেখানোর মাধ্যমে হলফনামায় অসত্য তথ্য প্রদান করেছেন।

এ ছাড়া তিনি মাগুরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সিরাজুল আকবরের সংসদ সদস্য পদের শুল্কমুক্ত কোটা ব্যবহার করে বেনামে ২ লাখ ৩০ হাজার ইউরো মূল্যে (গাড়ি আমদানির এলসির বিপরীতে ব্যাংক হতে পরিশোধিত মোট ১ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা) একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি আমদানি করে নিজ আবাসিক ঠিকানা ‘সুধা সদন’, বাড়ি নং-৫৪, রোড নং-৫, ধানমন্ডি, আবাসিক এলাকা, ঢাকা’র ঠিকানা ব্যবহার করে গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৬৩৬৪) করেন এবং নিজে তা ব্যবহার করেছেন। প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সিরাজুল আকবরের আয়কর নথিতে কিংবা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত তার হলফনামায় আলোচ্য গাড়িটির বিষয়ে কোন তথ্য উল্লেখ করেননি এবং তিনি কখনো তা ব্যবহারও করেননি বলে জানা যায়।

এমতাবস্থায়, কমিশন কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বর্ণিত তথ্যাদির আলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ এর আওতায় হলফনামায় অসত্য তথ্য প্রদানের বিষয়ে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত