বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু প্রস্তাব খারিজ ইরানের

আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ১২:২২ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি মেনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের রাশ টেনে ধরা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ফলে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসনের আপাত সম্ভাবনা নিয়ে আবারও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হলো। গত বুধবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে খামেনি বলেছেন, আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচির প্রধান ভিত্তিই হচ্ছে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ। ইরানের শত্রুরা সেখানেই হাত দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এমন এক প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছে, যা ইরানের স্বনির্ভর হওয়ার বিশ্বাসের পরিপন্থী। একই সঙ্গে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘নাক গলানোর’ কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন ইরানের শীর্ষ নেতা।

পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে সম্প্রতি পরোক্ষ আলোচনায় (যে বৈঠকে মধ্যস্থতাকারী পক্ষ থাকে) বসেছিল ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রস্তাবের সর্বশেষ প্রস্তাবটি শনিবার ইরানের কাছে উত্থাপন করেছে ওমান। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। তবে পাঁচ দফা বৈঠকের পরও দুদেশের মধ্যে বরফ গলার খুব একটা লক্ষণ দেখা যায়নি। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী নিজেদের দেশে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিতকরণ এবং ইতিমধ্যে সমৃদ্ধকৃত তেজস্ক্রিয় মৌলের পুরো ভাণ্ডার অন্য দেশে পাঠিয়ে দিতে নারাজ তেহরান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের বিষোদগার করে খামেনি বলেছেন, আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধত এবং অহংকারী নেতারা বারবার আপত্তি জানিয়ে আসছেন। ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার তাদের কে দিয়েছে!

সম্মিলিতভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করতে রাজি ইরান। তবে ইরানি কর্মকর্তারা শর্ত দিয়ে বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কনসোর্টিয়াম বা জোটের ভিত্তি অবশ্যই ইরানে হতে হবে। প্রস্তাব অনুযায়ী কখন ও কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে, সে বিষয়ে তারা আরও স্পষ্ট বক্তব্য চান তারা। ইরানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই জ্যেষ্ঠ ইরানি কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেন, যদি কনসোর্টিয়াম ইরানের ভূখণ্ডে পরিচালিত হয়, তবে তা বিবেচনার যোগ্য হতে পারে। কিন্তু যদি এটি দেশের বাইরের কোথাও হয়, তাহলে সেটি নিশ্চিতভাবেই ব্যর্থ হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে কোথায় এই কনসোর্টিয়ামের ভিত্তি স্থাপন করা হবে, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন- এই কনসোর্টিয়াম যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং এমনকি তুরস্কেও হতে পারে। এটি বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য জ্বালানি সরবরাহ করবে এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তদারকির আওতায় থাকবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত