রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

উচ্চশিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘মহামারী’

আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ১২:০৯ এএম

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চ্যাটজিপিটি ও অন্যান্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইভিত্তিক টুলের মাধ্যমে নকল করে ধরা পড়েছে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হাজার হাজার শিক্ষার্থী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের করা এক জরিপ বলছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এআইভিত্তিক টুল ব্যবহার প্রায় সাত হাজার নকলের প্রমাণ মিলেছে; যা প্রতি এক হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে গড়ে ৫ দশমিক ১ জন। ২০২২-২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল প্রতি হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ দশমিক ৬ জন। চলতি বছরের মে পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে, এ বছর এ সংখ্যা বেড়ে প্রতি হাজারে প্রায় ৭ দশমিক ৫ জনে পৌঁছাতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নথিভুক্ত এসব ঘটনা হিমশৈলের চূড়ামাত্র, কারণ প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। এসব তথ্য থেকে ইঙ্গিত মেলে চ্যাটজিপিটি ও অন্যান্য এআইভিত্তিক লেখার

টুল আসার ফলে দ্রুত পরিবর্তনশীল এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফলে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতির সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নেবে, তা নিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে ইউনিভার্সিটিগুলোকে।

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে জেনারেটিভ এআই এখনকার মতো সহজ পাওয়া যেত না। ফলে ওই সময় সব ধরনের অ্যাকাডেমিক অনিয়মের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই ছিল সরাসরি নকল বা প্ল্যাজিয়ারিজম। মহামারীর সময় অনেক পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়া শুরু হলে নকলের প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে বিভিন্ন এআই টুল উন্নত ও সহজে ব্যবহারের জন্য পাওয়ার কারণে নকলের ধরনও পাল্টে গিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে গার্ডিয়ান। জরিপে উঠে এসেছে, প্রচলিত ধরনের নকলের প্রমাণিত ঘটনা প্রতি এক হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৯ জন থেকে কমে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এসে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ২ জনে। চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, এ সংখ্যা আরও কমে প্রতি এক হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৮ দশমিক ৫ জনে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফ্রিডম অব ইনফরমেশন অ্যাক্টের অধীনে যুক্তরাজ্যের ১৫৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে গত পাঁচ বছরে অ্যাকাডেমিক অনিয়ম, নকল ও এআই সম্পর্কিত প্রতারণার প্রমাণিত ঘটনার পরিসংখ্যান চেয়েছে গার্ডিয়ান। যার মধ্যে শুধু ১৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য পেয়েছে ব্রিটিশ দৈনিকটি। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের তথ্য দিয়েছে, তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশেরও বেশি এখনো এআই অপব্যবহারের বিভিন্ন ঘটনাকে অ্যাকাডেমিক অনিয়মের আলাদা শ্রেণি হিসেবে রেকর্ড করেনি। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, এখনো এ নতুন সমস্যাটি পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেনি বা এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে শিক্ষা খাত। ফেব্রুয়ারিতে ‘হায়ার এডুকেশন পলিসি ইনস্টিটিউট’-এর এক জরিপে উঠে এসেছে, ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের মূল্যায়নের কাজে এআই ব্যবহার করেছে। গত বছর ‘ইউনিভার্সিটি অব রিডিং’-এর গবেষকরা নিজেদের মূল্যায়ন পদ্ধতির ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন, শিক্ষার্থীরা যেসব কাজ এআই দিয়ে তৈরি করে জমা দিয়েছিলেন ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রেই তা ধরা যায়নি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত