ফেনী শহরের একটি বাসায় চার তরুণীকে ছয় মাস আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলো ছোটন (৩৮), আরিফুল ইসলাম ওরফে আরমান (৩৩) ও ওমায়ের (১৯)। তবে এ ঘটনায় এক তরুণীর করা মামলার মূল আসামিকে এখনো ধরতে পারেনি। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও পুলিশের অনীহার কারণে প্রকাশ পেয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শাহজাহান জানান, গত সোমবার শহরের রামপুরে অভিযান চালিয়ে সৈয়দবাড়ি এলাকার কাসেম কটেজ নামে স্থানীয় আবুল কাসেমের (৬০) বাসা থেকে চার তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় ওই বাসার বিভিন্ন কক্ষ থেকে ৫৩টি ইয়াবাসহ মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নির্যাতনের আলামত জব্দ করা হয়। সোমবার দুপুরে ফেনী সদর হাসপাতালে চার তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা হয়। পরে ফেনীর বিচারিক হাকিমের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দিতে নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
এসআই শাহজাহান বলেন, রাতেই তরুণীদের একজন বাদী হয়ে বাড়ির মালিকের ছেলে কাওসার বিন কাসেমসহ (৩৩) অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ফেনী সদর মডেল থানায় মামলা করে। মঙ্গলবার রাতে ওমায়ের ও আরিফুলকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরদিন বুধবার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয়। তাদের মধ্যে ওমায়েরের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ফেনীর বিচারিক হাকিম দেলোয়ার হোসেন। এদিকে ছোটনকে গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার বরাত দিয়ে এসআই শাহজাহান বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে চার তরুণীকে এনে রামপুরের ওই বাসায় ছয় মাস ধরে আটকে রেখে আসামি ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক করতে বাধ্য করত। অসম্মতি জানালে তাদের সিগারেট ও ইলেকট্রিসিটির ছ্যাঁকা দিত এবং মারধর করত। গত সোমবার সকালে ওই বাসার ভেতরে তরুণীদের কান্না ও চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসার দরজার তালা ভেঙে চার তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাসার মালিকসহ নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যায়।
ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আবু তাহের দেশ রূপান্তরকে বলেন, সোমবার দুপুরে পুলিশ শারীরিক পরীক্ষা করানোর জন্য চার তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে ওই তরুণীদের শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।