মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

দাম কমেছে সবজি ও মুরগির, বেড়েছে চালের

আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৪, ১২:২২ পিএম

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সব ধরনের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। বাজারে খাদ্যপণ্যের দামও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিল। কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনী নামানোর পর পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। অন্য পণ্যে ব্যবসার গতি স্বাভাবিক না হলেও সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি, মাছ ও ডিমের দাম আগের অবস্থায় ফিরেছে। তবে কোনো সবজি ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া দেশে খাদ্যের প্রধান উপকরণ চালের দামও কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কিছুটা স্বাভাবিক মনে হলেও এখনো মানুষের মনে আতঙ্ক কাটেনি। পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজারে আগের থমথমে পরিস্থিতির রেশ আছে। বাজারে মানুষ কম আসছে। তাতে বিক্রি কমেছে। তবে পণ্যের সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কিছুটা কমেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন রাজধানীর হাতিরপুল, এজিবি কলোনি ও শান্তিনগর বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫, বরবটি ৮০-১০০, কাঁকরোল ৭০-৯০, পটোল ৫০-৬০, মরিচ ১৮০-২০০, চিচিঙ্গা ৬০-৭০, ধুন্দল ৫০-৬০, কচুর লতি ৭০-৮০, কচুরমুখী ৭০-৮০, শসা ৬০-৭০, মিষ্টি কুমড়া ও টমেটো ১৫০-১৮০ টাকায়।

মতিঝিলের এজিবি কলোনি বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মাহফুজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আন্দোলনের কয়েক দিন বাজারে সরবরাহ কম থাকায় সব ধরনের সবজির দাম অনেক বেশি ছিল। এখন বাজারে সবজি আসতে শুরু করায় দাম কমে অর্ধেকে নেমেছে। তবে বিক্রি কম হচ্ছে।’

সবজির বাজারে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও মজুদ সংকটের অজুহাতে দেশে খাদ্যের প্রধান উপকরণ চালের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৯ লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে ১ কোটি ৭১ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমন-বোরো মৌসুমে উৎপাদিত চাল দিয়ে দেশের চালের মোট চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা ও ব্রি-২৮ সর্বনিম্ন ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট নামের পরিচিত পলিশ করা চাল ৭০-৮০ ও নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত।

মগবাজারের মা স্টোরের স্বত্বাধিকারী সজীব মাহমুদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘১০ দিন ধরেই পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়ছে। প্রতি কেজি চালে বাড়তি ৩-৪ টাকা। এর বাইরে অন্যান্য খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে এক কেজি চালে ৫ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।’

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, অপরিবর্তিত দামে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হলেও ব্রয়লার মুরগির কেজিতে অন্তত ২০ ও সোনালি মুরগির কেজিতে ৩০ পর্যন্ত কমেছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা। খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৬৫-১৮৫ ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৯০ টাকার মধ্যে।

শান্তিনগর বাজারের চাঁদপুর ব্রয়লার হাউজের বিক্রয়কর্মী সানিম জানান, গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মুরগিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়ায় খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছিল।

অন্যদিকে মাছের বাজার ঘুরে তেমন কোনো স্বস্তির খবর পাওয়া যায়নি। আগের মতো চড়া দামে প্রতি কেজি পাঙ্গাশ ২০০-২২০, তেলাপিয়া ২০০-২৫০, চাষের কৈ ২৫০-২৭০, ছোট রুই ২৫০-২৬০, কার্প জাতীয় মাছ ৩০০, চাষের শিং ৪৫০-৬০০, সাগরের পোয়া ৪০০-৬৫০ ও বাইলা মাছ বিক্রি হচ্ছিল ৬৫০-৭০০ টাকায়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত