ভেনেজুয়েলার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলাস মাদুরোর জয় প্রত্যাখ্যান করে বিরোধী প্রার্থী এডমান্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে বিজয়ী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার এ স্বীকৃতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেন, পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে ভেনেজুয়েলার জনগণের কাছে এটি স্পষ্ট যে এডমান্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়া সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে ২৮ জুলাইয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন।
তিনি বলেন, ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাই। আন্তর্জাতিক অংশীদারদের নিয়ে যৌথভাবে এ প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার উপায় বের করতে আমরা প্রস্তুত।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রাজনৈতিক সহিংসতার যন্ত্রে পরিণত হওয়া উচিত নয়। দেশের নাগরিক ও যাঁরা গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করেন, তাদের বিরুদ্ধে এ বাহিনীকে ব্যবহার করাও অনুচিত।
এদিকে মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করে প্রকাশিত বিতর্কিত ফলাফলকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তাল ভেনেজুয়েলা। চলমান বিক্ষোভে এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কারিনা মাচাদো। হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এসব ঘটনায় মাচাদো দেশজুড়ে গণবিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, শনিবার প্রতিটি শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মাচাদো বলেন, ২৮ জুলাইয়ের ঐতিহাসিক বিজয়ের গৌরব নিয়ে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ, সংগঠিত ও সচল থাকতে হবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে তিনি লেখেন, তিনি আত্মগোপনে আছেন এবং নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
২০১৩ সাল থেকে ভেনেজুয়েলার ক্ষমতায় থাকা মাদুরো এবার ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বলে দেশটির নির্বাচনী সংস্থা ঘোষণা করে। তবে বিরোধী শিবির দাবি করেছে, ৯০ শতাংশ ভোট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মাদুরোর চেয়ে দ্বিগুণ বেশি ভোট পেয়েছেন গঞ্জালেজ। তিনি নির্বাচন-পূর্ব নিরপেক্ষ জরিপেও মাদুরোর চেয়ে এগিয়ে ছিলেন।
বিশ্বের বৃহত্তম তেলের মজুদ থাকা সত্ত্বেও ভেনেজুয়েলা অত্যন্ত দরিদ্র একটি দেশ। এর কারণ ভেনেজুয়েলায় মাদুরোর ১১ বছরের শাসনের মধ্যে দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক সংকোচন দেখা গেছে। গত কয়েক বছরে সামান্য উন্নতি সত্ত্বেও এখনো লাখ লাখ মানুষের পর্যাপ্ত খাবার ও ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই। জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক কমিশনের তথ্যমতে, মাদুরো ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সাল থেকে প্রায় ৭৭ লাখ মানুষ ভেনেজুয়েলা ত্যাগ করেছেন।