আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য রেলওয়ে ও বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি আজ শুক্রবার থেকে শুরু হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী গতকাল বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে জানান, ঈদযাত্রার টিকিট বিক্রির প্রস্তু‘তি শেষ। আগামীকাল (আজ) থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট অনলাইনে বিক্রি শুরু হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ১ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতর হবে ধরে নিয়ে টিকিট বিক্রির সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে যাত্রার ১০ দিন আগে আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। ঈদযাত্রার টিকিটও ১০ দিন আগে বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া এবারও ঈদের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। কাউন্টারে কোনো ঈদের টিকিট বিক্রি করা হবে না।
রেলের নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে, আন্তঃনগর ট্রেনের ২৪ মার্চের টিকিট বিক্রি করা হবে ১৪ মার্চ; ২৫ মার্চের টিকিট ১৫ মার্চ; ২৬ মার্চের টিকিট ১৬ মার্চ; ২৭ মার্চের টিকিট ১৭ মার্চ; ২৮ মার্চের টিকিট ১৮ মার্চ; ২৯ মার্চের টিকিট ১৯ মার্চ এবং ৩০ মার্চের টিকিট পাওয়া যাবে ২০ মার্চ।
রেলওয়ে আরও জানায়, গত বছর ঈদুল ফিতরে ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের কমবেশি ৩০ হাজার আসনের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। এবার আসন সংখ্যা ৩৫ হাজারের বেশি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ট্রেনে বাড়তি কামরা যুক্ত করা হবে। উত্তরবঙ্গের পথে লাইনের সক্ষমতা না থাকায় বিশেষ ট্রেন চালানো কঠিন। এ ছাড়া সাম্প্রতিক ওই দিকে নতুন ট্রেনও চালু হয়নি। এবার ঈদে উত্তরের পথের ট্রেনগুলোতে বাড়তি কামরা যুক্ত করে আসনসংখ্যা বাড়ানো হবে।
এদিকে ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি যাত্রী যাতায়াত করে বাসে। মূল ভরসা বেসরকারি পরিবহন। এখন সরকার আর বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রির তারিখ নির্ধারণ করে না। তবে বাস মালিকদের সংগঠনগুলো জানিয়েছে, আজ থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাবে। ফলে কিছু কোম্পানি ঘটা করে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করে, কেউ কেউ অন্যান্য সময়ের মতোই টিকিট বিক্রি করে। ছোট কোম্পানি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন অনেক বাসের মালিক অগ্রিম টিকিট বিক্রিই করেন না। তারা শেষ মুহূর্তে টিকিট বিক্রি করেন। এতে যেসব দিনের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে, সেসব টিকিট বাড়তি দামে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।
এবারও ঈদযাত্রার টিকিট নিয়ে কালোবাজারি চক্র সক্রিয় হতে পারে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল সব কিছু। এখন দেখা যাচ্ছে, আরও কিছু পক্ষ তৈরি হয়েছে। এখন এই সরকারের উচিত আমাদের যাত্রী প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে ভিজিট করা, যেখানে কালোবাজারি থাকবে সেখানে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেওয়া। পুরো টিকিট ব্যবস্থাকে ভালোভাবে মনিটরিং করে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। তা না হলে প্রতিবছরের মতো এবারও টিকিট কালোবাজারিদের কাছে জিম্মি থাকবে যাত্রীরা।’