শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

রানীক্ষেত রোগে ১৫ হাজার মুরগির মৃত্যু

আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৬:৩৬ এএম

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে রানীক্ষেত রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে এই রোগে ১৫ হাজার মুরগি মারা গেছে। ওষুধ দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না মুরগির মৃত্যু। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার ১১৫ খামারি ও হাজারো গৃহন্থ পরিবার।

উপজেলার মন্মথপুর ইউনিয়নের খোড়াখাই গ্রামের সৈকত এগ্রো ফার্মের মালিক শাহিনুর ইসলাম জানান, গত তিন দিনে তার খামারের ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ৩ হাজার মুরগি মারা গেছে। এতে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে তার।

চন্ডিপুর ইউনিয়নের দারারপাড় গ্রামের কিবরিয়ার খামারে গত ১০ দিন আগে দুই হাজার মুরগি রানীক্ষেতে মারা গেছে। তিনি বলেন, ‘যত ওষুধ ব্যবহার করছি, তাতে কাজ হচ্ছে না।’

মন্মথপুর ইউনিয়নের খামারি আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমার খামারের ২ হাজার ৫০০ মুরগি মারা গেছে। বড় আশা ছিল, ঈদে মুরগিগুলো বিক্রি করব। কিন্তু আমার সব শেষ হয়ে গেল।’

মোমিনপুর ইউনিয়নের চকজয়দেবপুর গ্রামের খামারি মশিউর রহমান বলেন, ‘খামারে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ৯০০ মুরগি ছিল। এর মধ্যে গত তিন দিনে ৫০০ মুরগি মারা গেছে। অসুস্থ মুরগি প্রথমে ঝিম ধরে থাকে। এরপর মারা যায়। আমার প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।’

পার্বতীপুর শহরের রুস্তম নগর মহল্লার খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত এক মাসে খামারে দুই হাজার মুরগি মারা গেছে। এতে তার প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সব ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, কাজ হচ্ছে না।’

হাবড়া ইউনিয়নের চৌপতি এলাকার খামারি মিঠু মিয়ার খামারে দুই হাজার মুরগি এক সপ্তাহ আগে মারা গেছে। তিনি জানান, খামারের বাকি মুরগিগুলোকে সুস্থ করতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করছেন, কিন্তু তেমন সুফল মিলছে না।

কালিকাবাড়ী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সুমন সরকার জানান, গত ১০ দিনে তার ৪০-৫০টি মুরগি মারা গেছে।

পৌরশহরের নয়াপাড়া গ্রামের সাদেক আলী বলেন, ‘২০ দিন আগে আমার সাড়ে ৩০০ মুরগি মারা গেছে। ওষুধেও কোনো কাজ হচ্ছে না। সব খামারে ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’

এ ছাড়া রামপুর ইউনিয়নের পূর্ব হুগলিপাড়া গ্রামের খামারি মাসুদ মিয়ার ৬০০ মুরগি, ওবায়দুল হকের ৩০০ মুরগি, হামিদপুর ইউনিয়নের খামারি মোজাহারুল হকের ৭০০ মুরগি, মোমিনপুর ইউনিয়নের বেলতলী এলাকার ইমরান আলীর ৬০০ মুরগি, মন্মথপুর ইউনিয়নের চড়কডাঙ্গা গ্রামের তসলিম উদ্দিনের ১১০০ মুরগি ও পৌরশহরের ছোট বৃত্তিপাড়া গ্রামের খামারি লুৎফর রহমানের এক হাজার মুরগি মারা গেছে।

এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান বলেন, ‘রানীক্ষেত প্রতিরোধে সঠিক ভ্যাকসিন ও উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হয়। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। সময়মতো উন্নতমানের ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে হয়। প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে পর্যাপ্ত রানীক্ষেতের ভ্যাকসিন আছে।’ এ সময় তিনি জানান, উপজেলায় এখন পর্যন্ত রানীক্ষেতে মুরগি মারা গেছে এমন তথ্য তার কাছে নেই।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত