আট মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন কুড়িগ্রামের ২৯৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার। অন্যদিকে ক্লিনিকগুলোতে কমে গেছে ওষুধের সরবরাহ। এদিকে বেতন-ভাতার বিষয়টি মানবিক হওয়ায় বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন। সমস্যার কথা শুনে পরামর্শের পাশাপাশি ওষুধ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
জেলার চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০০ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠা করা হয় ২৯৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক। নিয়োগ দেওয়া হয় একজন করে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার। এরপর থেকে ক্লিনিকগুলোতে সাধারণ রোগের চিকিৎসাসহ বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করছেন তারা। আর বাড়ির পাশে স্বাস্থ্যসেবাসহ ওষুধ পেয়ে খুশি স্থানীয়রাও।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলায় ২৯৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে চরাঞ্চলে রয়েছে ১১০টি। ক্লিনিকগুলোতে আগে ২৭ প্রকারের ওষুধ দেওয়া হলেও এখন দেওয়া হচ্ছে ২২ প্রকারের।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের সিতাইঝাড় কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার রনজিনা বেগম বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো প্রকল্প থেকে ট্রাস্টের আওতায় নেওয়ায় ২০২৪ সালের জুলাই থেকে বেতন-ভাতা বন্ধ। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটছে আমাদের। ছেলে-মেয়েদের স্কুলের খরচ চালাতে পারছি না। বেতন না পাওয়ায় কী যে কষ্ট আছি বলার ভাষা নেই। ঈদের আগে বেতন-বোনাস পেলে, ঈদটা পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোভাবে করতে পারব।’
শাকিল আহমেদ নামের আরও এক কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বেতন বন্ধ থাকার কারণে মানসিকভাবে আমরা ভেঙে পড়েছি। তারপরেও স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রেখেছি আমরা। আগে যা হয়েছে হোক, ঈদের আগে বেতন-বোনাসটা পেলে পরিবার নিয়ে ঈদ করতে পারব আমরা।’
কুড়িগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. গোলাম মোহাইমেন বলেন, ‘ক্লিনিকগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া সব ওষুধ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন-ভাতার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত তারা বেতন-ভাতা পাবেন।’