ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান বর্বরোচিত ইসরায়েলি হামলা ও মানবতাবিরোধী গণহত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চবি প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাধারণ জনতা অংশগ্রহণ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সসাবেশে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহীদুল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারীসহ অনেকে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্ব সভ্যতার নামে যারা মানবতা শেখায় তারা আজ ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। আজকে বিশ্বের বিবেক কোথায়? আমরা হয়তো সরাসরি ফিলিস্তিনকে সাহায্য করতে পারব না, তবে নিজ ও পরিবার থেকে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করতে পারব। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এদেশের মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে ছিল এবং থাকবে। ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী যে কার্যকলাপ বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ ও বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে বলে দাবি জানান বক্তারা।
সমাবেশে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, আমাদের প্রতিবাদ ইসরায়েলি বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে, যারা ফিলিস্তিনে নারী, শিশু, বৃদ্ধাকে হত্যা করছে। আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন প্রতিবাদ হচ্ছে। কিন্তু বিশ্ববিবেক আজ নিরব। ওআইসি, জাতিসংঘ, আরবলীগ এ বিষয়ে কোন ভূমিকা পালন করছে না। আমরা আশা করি বিশ্ববিবেক দাঁড়াবে এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে কাজ করবে।
এ সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের একটাই এজেন্ডা তা গাজাবাসীকে রক্ষা করার এজেন্ডা। আমাদের প্রতিবাদ তাদের বিরুদ্ধে যারা নিয়মিতভাবে মানবতা লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের নিরপরাধ শিশু, বৃদ্ধা, নারীদের নৃশংসভাবে হত্যা করছে। আরববিশ্ব রাজনৈতিক কারণে মানবতার পক্ষে কথা বলছে না।
সমাবেশে উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, আমরা ছাত্র জীবন থেকে ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন, মিছিল করেছি। কিন্তু কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেনি। মানব সভ্যতায় এমন হত্যা পৃথিবীর আর কোথায় ঘটেনি। পৃথিবীর ১৪৮টি রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও জাতিসংঘ কেন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না? আরব লীগ, ইসলামী সহযোগী সংস্থাকে (ওআইসি) দ্রুত ফিলিস্তিনের পক্ষে পদক্ষেপ নিয়ে হবে। অন্যথায় এসব সংস্থা ভেঙে দিতে হবে।
সমাবেশে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, গাজায় যে আক্রমণ হচ্ছে তা আমরা বাল্যকাল থেকে দেখছি। আন্তর্জাতিক মহল সকল বিষয়ে সরব কিন্তু ফিলিস্তিনের সময় তারা নিরব কেন? জ্ঞান বিজ্ঞানের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। আমাদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হলে শক্তিশালী জনসম্পদ তৈরি করতে হবে। পুরো পৃথিবী থেকে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করতে হবে। মানবতাবিরোধী কাজ যেখানেই হবে সেখানেই আমরা প্রতিবাদ করব।
