রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ

অফিস খরচের নামে বিদেশে টাকা পাঠানো যাবে না

আপডেট : ০৯ মে ২০২৫, ০৯:৫৫ পিএম

অর্থপাচার রোধে কড়া পদক্ষেপ নিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে বিদেশে শাখা অফিসের খরচের নামে দেশ থেকে টাকা পাঠানো যাবে না। ফলে কোনো ব্যাংক-কোম্পানির বিদেশে শাখা, প্রতিনিধি অফিস ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানির দৈনন্দিন পরিচালন ব্যয় এবং নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা সংশ্লিষ্ট দেশে কোম্পানির অর্জিত আয় থেকে বহন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারি করা সার্কুলার থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

সার্কুলারে ‘বাংলাদেশি কোনো ব্যাংক-কোম্পানির বিদেশে শাখা, প্রতিনিধি অফিস ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানি (এক্সচেঞ্জ হাউজ, ফাইন্যান্স কোম্পানি) স্থাপন এবং বিদেশি কোনো ব্যাংক-কোম্পানি বা ব্যাংক-ব্যবসায় নিয়োজিত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় সংক্রান্ত নীতিমালা’ জারি করা হয়েছে। এর ফলে অফিস খরচ আর্থিক লেনদেনের নামে বিদেশে অর্থপাচার কমবে বলে বিশ্লেষকরা আশা করছেন। 

সার্কুলারটির মাধ্যমে একই বিভাগের ২০০১ সালের ১৬ জুলাই জারি করা নীতিমালা রহিত করা হয়েছে। তবে, নতুন সার্কুলার জারির পূর্ব পর্যন্ত রহিত করা নীতিমালার আওতায় গৃহীত সব কার্যক্রম বৈধ বলে গণ্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

নতুন নীতিমালাটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের অবিলম্বে কার্যকর করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। 

এতে- বিদেশে শাখা বা প্রতিনিধি অফিস, ও সাবসিডিয়ারি (এক্সচেঞ্জ হাউজ, ফাইন্যান্স কোম্পানি ইত্যাদি) স্থাপনের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়ে ২০টি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক-কোম্পানির বিদেশে শাখা, প্রতিনিধি অফিস ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানি স্থাপন সংক্রান্ত আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য ১১টি; বিদেশি কোনো ব্যাংক-কোম্পানি বা ব্যাংক-ব্যবসায় নিয়োজিত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় সংক্রান্ত ৪টি এবং বিবরণী দাখিলের জন্য ৬টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রসার এবং সংশ্লিষ্ট লেনদেন সুষ্ঠু ও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশি কোনো কোনো তফসিলি ব্যাংক-কোম্পানি ২০০১ সাল থেকে বিদেশে শাখা বা ফাইন্যান্স কোম্পানি বা এক্সচেঞ্জ হাউজ বা প্রতিনিধি অফিস স্থাপনের মাধ্যমে ওভারসিস্ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্ণিত প্রতিষ্ঠানসমূহ সংশ্লিষ্ট দেশের গ্রাহকদের আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ এবং অন্যান্য ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত লেনদেন সম্পন্ন করে থাকে। পাশাপাশি ব্যাংক-কোম্পানি বিদেশে তাদের বিভিন্ন সাবসিডিয়ারি কোম্পানি স্থাপনের মাধ্যমে ট্রেড ফাইন্যান্স, বিল ডিসকাউন্টিং, রেমিট্যান্স ট্রান্সফার ইত্যাদি কার্যাদিও পরিচালনা করে থাকে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত দুই দশকে বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থায় ব্যাংক কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাংক ব্যবসার ধরণ এবং পরিধি বিস্তৃতি লাভ করেছে। বিশ্বায়ন ও মুক্তবাজার অর্থনৈতিক বাস্তবতায় ব্যাংক খাতের অবকাঠামোগত পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন নতুন ব্যাংকিং পণ্য ও সেবার প্রচলন ঘটেছে। সে সূত্রে বৈশ্বিক নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ওভারসিস্ ব্যাংকিং সংক্রান্ত কার্যক্রমের বিস্তৃতি, আত্তীকরণ, প্রয়োগ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার রূপরেখা ও এতদসংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রণয়নের বিষয়ে নতুন ভাবে চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে।

বর্ণিত প্রেক্ষাপটে, তফসিলি ব্যাংকসমূহের ওভারসিস্ ব্যাংকিং কার্যক্রম আদর্শরূপে পরিচালনা এবং পর্যবেক্ষণের নিমিত্ত প্রদত্ত নীতিমালায় পরিবর্তন/সংযোজন/পরিমার্জন/পরিবর্ধনের প্রয়োজনীয়তা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত