বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

বৃদ্ধ হওয়ার আগেই হজ করা উচিত

আপডেট : ২৬ মে ২০২৪, ১২:০১ এএম

আর্থিক ও শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান লোকদের ওপর হজ ফরজ হয়। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যুবক অবস্থায় তাদের ওপর হজ ফরজ হয়, কিন্তু হজ পালন করে বৃদ্ধ অবস্থায়। তাদের কারও কারও দৃষ্টিভঙ্গি হলো, সারা জীবনে নিজেদের দ্বারা যত পাপ ও গুনাহের কাজ সংগঠিত হবে, শেষ জীবনে হজ করে সেসব গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে পরবর্তী সময়ে আল্লাহ-বিল্লাহ করে জীবনের শেষ দিনগুলো অতিবাহিত করবেন। এসব লোকদের উদ্দেশে কথা হলো, এমন চিন্তা-ভাবনা মোটেও ভালো নয়। এমন নিয়তে হজ করলে তা পরকালের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না।

কারও ওপর যুবক অবস্থায় হজ ফরজ হওয়ার পর যদি সে নিয়ত করে বৃদ্ধ অবস্থায় হজ করবে, আর বৃদ্ধ হওয়ার আগেই যদি মারা যায় তাহলে ফরজ হজ আদায় না করার কারণে গুনাহগার হতে হবে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির বায়তুল্লাহর হজ করার মতো পাথেয় ও যানবাহন আছে অথচ হজ পালন করল না, সে ইহুদি কিংবা খ্রিস্টান হয়ে মারা গেল কি না, তা বলা যায় না।’ (তিরমিজি)

হজের বাধ্যবাধকতা সারা জীবনে মাত্র একবার। সামর্থ্যবান হওয়া মাত্রই একবারের বেশি যতবারই হজ করা হোক না কেন, তা নফল ইবাদতের মর্যাদা ছাড়া আর কিছু নয়। লোক দেখানো হিসেবে কোনো ব্যক্তি যদি বারবার হজে গমন করে, তবে তা নিছক ভ্রমণ হবে। ধর্মীয় অনুশাসনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। তবে যাদের ওপর হজ ফরজ তাদের উচিত হলো এ ফরজ অতিদ্রুত আদায় করে নেওয়া।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি হজ করেনি এবং মালের জাকাত আদায় করেনি, মৃত্যুকালে সে দুনিয়ায় ফিরে আসার প্রার্থনা করবে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো যে, দুনিয়ায় ফিরে আসার প্রার্থনা তো কেবল কাফেররাই করবে (বলে আমরা জানি)। তিনি বললেন, এ কথা তো আল্লাহর কিতাবেই বর্তমান রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা কারও মৃত্যু আসার আগেই আমি যে জীবনোপকরণ দিয়েছি তা থেকে খরচ করো। অন্যথায় মৃত্যু এলে সে বলবে, ও আমার পরওয়ারদেগার! আমাকে আরও কিছুদিনের জন্য অবকাশ দিলে আমি দান-খয়রাত করতাম, অর্থাৎ জাকাত আদায় করতাম এবং সৎকর্মপরায়ণ হতাম। হজ পালন করতাম। কিন্তু নির্ধারিত সময় যখন এসে যাবে তখন আর কাউকে কখনো অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা করো আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত।’

(সুরা মুনাফিকুন ১০-১১)

হজ ইসলামের অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ। যা আর্থিক সচ্ছলতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আমাদের সমাজে হজে যাওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্যবান অসংখ্য মানুষ আছেন। তাদের অনেকেই সারা জীবন ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি ও নানাবিধ কর্মব্যস্ততায় কাটিয়ে দেন। গোটা জীবনে হজের জন্য একটি মাস বরাদ্দ করতে পারেন না। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

হজ আদায়ের ক্ষেত্রে ইসলামি স্কলারদের পরামর্শ হলো, আপনার সামর্থ্য আছে আর্থিকভাবে, সুতরাং আর বিলম্ব নয়, এখনই হজ আদায় করে ফেলুন। প্রত্যেকের শারীরিকভাবে সামর্থ্য থাকা অবস্থায় এবং বৃদ্ধ হওয়ার আগেই হজে যাওয়া উচিত। কারণ হজের সফরে বেশ কষ্টসাধ্য কিছু আমল করতে হয়, যা শারীরিকভাবে সামর্থ্য না থাকলে অত্যন্ত কষ্টদায়ক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত