মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করতে বাতিল করতে হবে শুল্ক : চীন

আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৭ এএম

চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের দেশীয় পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক তুলে নিতে আহ্বান জানিয়েছে। বেইজিং বলছে, এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ সমাধানের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সদিচ্ছা প্রমাণ করবে। চীনা কর্মকর্তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন থেকে যে দাবি করা হয়েছে, তা এখনো কোনো আলোচনার পর্যায়ে আসেনি। শুল্কযুদ্ধ নিয়ে কঠোর ভাষায় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। মন্ত্রণালয়টির মুখপাত্র হে ইয়াদং বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ‘সত্যিই’ সমস্যাটির সমাধান করতে চায়, তাহলে তাদের চীনের বিরুদ্ধে আরোপিত সব একতরফা শুল্কব্যবস্থা প্রত্যাহার করা উচিত। তিনি আরও বলেন, যে ঘণ্টা বেঁধেছে, তাকেই এটি খুলতে হবে। অর্থাৎ সমস্যা যিনি তৈরি করেছেন, সমাধানও তাকেই করতে হবে।

বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। যার ফলস্বরূপ চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্ডার করা বোয়িং প্লেনগুলো ফেরত পাঠিয়েছে। এদিকে ট্রাম্প চীনের ব্যাপারে তার অবস্থান শিথিল করেছেন। তিনি বলেছেন, চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক গুরুত্বের সঙ্গে কমানো হবে, তবে শূন্য হবে না। এখন পর্যন্ত চীন ও যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক-পাল্টা শুল্ক বহাল রেখেছে। ট্রাম্প ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন চীনা পণ্যের ওপর এবং চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়া জিয়াকুন জানিয়েছেন, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক নিয়ে কোনো পরামর্শ বা আলোচনা হয়নি এবং কোনো চুক্তিও হয়নি। এই মন্তব্যের পর তিনি প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্যকে ‘মিথ্যা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা সক্রিয় এবং তিনি বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সুরক্ষিত করতে খুব ভালো আচরণ করবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট এই দাবি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আলোচনা এখনো শুরু হয়নি। তবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বড় চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে এবং বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা কমানোর আশা রয়েছে।

চীনের সর্বশেষ প্রতিক্রিয়ার জবাব দিতে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে বলেন, বোয়িংকে চীনের বিরুদ্ধে ডিফল্ট ঘোষণা করা উচিত। কারণ চীন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যে বিমানের অর্ডার দিয়েছিল, তা গ্রহণ করেনি। তিনি আরও বলেন, এটি চীনের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি ছোট উদাহরণ, যা বহু বছর ধরে চলছে। ট্রাম্প আবারও অভিযোগ করেছেন, চীন থেকে মেক্সিকো এবং কানাডার মাধ্যমে সিনথেটিক ওপিওড ফেন্টানিল আমদানির ফলে শত শত হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে।

বিমান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের প্রধান কর্মকর্তা কেলি অর্টবার্গ জানান, চীন সম্প্রতি তাদের অর্ডার করা বিমানের একটি অংশ ফেরত পাঠিয়েছে। তিনি বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে দুটি বিমান ইতিমধ্যে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং আরও একটি ফেরত আসবে। এদিকে বুধবার চীন একটি গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করেছে, যেখানে ৮০টিরও বেশি বিদেশি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির কারণে তাদের বিনিয়োগ ও কর্মকাণ্ডে যে প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে আলোচনা করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার লিং ঝি বলেছেন, আশা করা হচ্ছে, বিদেশি কোম্পানিগুলো এই সংকটকে সুযোগে পরিণত করবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত