রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ নিম্ন আয়ের মানুষ

আপডেট : ১১ মে ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম

গত কয়েকদিনের টানা তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমের সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তি আর কষ্ট বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র রোদের কারণে দিনমজুর, রিকশাচালক ও ভ্যানচালকরা কাজ করতে পারছেন না। এদিকে কাজ না করলে খাবার জুটবে না। তাই পেটের তাড়নায় প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন অনেকে। অসহ্য গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। মার্কেট কিংবা বাজারেও ক্রেতাসাধারণের উপস্থিতি কম।

 

শনি ও রবিবার (১১মে) সকালে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর  শহরের থানা রোড, কলেজ গেট, হাসপাতাল রোড, জয়বাংলমোড় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রিকশাচালক ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা গরমে হাঁসফাঁস করছেন। রিকশাচালকদের কেউ কেউ গাছের নিচে রিকশায় বসে আবার কেউ দোকানে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। গত ৩-৪ দিন ধরে সকাল থেকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা বাড়ছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। 

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের থানা রোডে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে কথা হয় রিকশা চালক আব্দুল হেলিমের সাথে। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে রোদের তাপ অনেক বেশি। রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। এছাড়া রোদ বেশি হলে মানুষ ঘর থেকে কম বের হন। এতে আমাদের আয় কমে গেছে। চলতেও কষ্ট হচ্ছে।

রিকশাচালক এরশাদ মিয়া ও রাসেল মিয়া বলেন, সকালে কিছু সময় রিকশা চালিয়ে বিকালের আগে আর বের হতে পারি না। এতো গরমে ঘরেও শান্তি নেই। সারাদিনে অল্প কিছুক্ষণের জন্য ঘরে ফিরলেও লোডশেডিং। আগে যেখানে দৈনিক ৬০০-৮০০  আয়-রোজগার করা যেত, এখন সেখানে ৩০০-৫০০ ইনকাম করতেই কষ্ট হয়। এতে পরিবারের নিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছে। 

ধান-চালের বস্তা মাথায় করে রিকশা ও অন্যান্য পরিবহণে তুলে দেয় দিনমুজুর দিনমুজুর সুজন। তিনি বলেন, অন্যান্য পেশার তুলনায় আমাদের কাজে পরিশ্রম বেশি। আর কয়েক দিনের রোদে আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে।

ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জাহিদুল হক বলেন, অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া যারা আগে থেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা গরমে দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, হিটস্ট্রোক, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের এ সময় নিরাপদে রাখতে হবে। তাছাড়া যারা কর্মজীবী মানুষ তারা ভর দুপুরে অতিরিক্ত গরমে এড়িয়ে সকালে ও বিকেলে কাজ করতে পারেন। 

তিনি আরও বলেন, এই গরমে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা বাদ দিয়ে নরমাল পানি কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে অল্প অল্প করে বারবার খেতে হবে। যেকোনো ধরনের সফট ড্রিংক এবং আইসক্রিম জাতীয় খাবার পরিহার করে ডাবের পানি, দেশিয় রসালো  ফলমূল খেতে হবে। পোলাও মাংস, মসলাদার খাবার এবং অন্যান্য রিচ ফুড এই গরমে সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে। যারা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হবেন তাদেরকে দ্রুত ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। অবস্থার উন্নতি  না হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত