মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

শিল্পকর্ম বেচে মাকে বাঁচাতে চান তারিফ

আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, ০১:২৭ এএম

তারিফ হাসান মেহেদী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নেত্রকোনার ছেলে তারিফরা চার ভাই ও তিন বোন। বাবা বকুল মিয়া ছিলেন মাছ ব্যবসায়ী। গত বছর হঠাৎ তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। ক্যানসারের ব্যয়বহুল চিকিৎসায় সর্বস্বান্ত হয়ে যায় এই পরিবার। তবু বাবাকে বাঁচাতে পারেননি। উপরন্তু তারা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বাবাকে হারানোর কয়েক মাস পর পরিবারের ভরসা বড় ভাই শাহিন মিয়াও হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরিবারটি পড়ে অকূল পাথারে। তারিফের মা অসুস্থ ছিলেন ২০১৪ সাল থেকেই। তার চিকিৎসা শুরু হয় তখন থেকেই। ২০২২ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তারিফের মায়ের হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। এরই মাঝে সম্প্রতি হঠাৎ করেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এ অবস্থায় মায়ের চিকিৎসার খরচ চালানোর জন্য নিজের সন্তানতুল্য শিল্পকর্ম বিক্রি করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। সেটিই তিনি ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন। তবে অনেকেই শিল্পকর্ম না কিনেও পাশে থাকতে চান। উপায়ান্তর না দেখে তাদের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে তারিফ তাই জানিয়েছেন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিকাশ ও রকেট অ্যাকাউন্ট।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৩ এপ্রিল তারিফ লিখেছেন, আমার আম্মাকে বাঁচাতে দয়া করে এগিয়ে আসুন। আজ সব লজ্জা, ইতস্তত ভাঙলাম। সারাজীবন মানুষের উপকার করে আজ নিজের উপকারের জন্য আপনাদের কাছে হাত পেতে অনুরোধ করছি, আমার আম্মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন। কী ভাগ্য আমার! গত বছরের ১৪ জুলাই বাবা ও ৬ নভেম্বর বড় ভাইকে হারিয়েছি। ক্যানসার আক্রান্ত বাবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখনো ৩৮০০০ টাকার মতো ঋণে জর্জরিত আছি। যা পরিবারের কাউকে বলিনি তাদের চিন্তা হবে। আম্মা ২০১৪ সাল থেকে অসুস্থ। এর মধ্যে ২০২২ সালে ব্রেন স্ট্রোক করে কথা বলা, চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বিছানায় শায়িত একটা মানুষকে প্রতিনিয়ত দেখাশোনা করা, চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা, এসব করতে করতে আজ আমরা অসহায়। গতকাল আম্মা আবার হার্ট অ্যাটাক করেছেন। জানি না আল্লাহ একটা মানুষকে এভাবে কেন কষ্ট দিচ্ছেন। এখন দ্রুত উন্নত চিকিৎসা করানো দরকার, যার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। ২০১৬ থেকে আম্মার মেডিসিন ও অন্যান্য মেডিকেল টেস্ট বাবদ ঋণ লাখ টাকার ওপরে। আমার অবস্থা মুমূর্ষু। আমার আম্মাকে বাঁচাতে আপনারা এগিয়ে আসুন। নেত্রকোনার ডাক্তার  বলেছেন, ৪৩% হার্ট ব্লক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মমেকের রিপোর্ট বলছে হার্ট নয়, আম্মা আবার ব্রেন স্ট্রোক করেছেন। মাথায় রক্ত জমাট হতে পারে। আম্মা এখন ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। আপনারা আমার এই শিল্পকর্মগুলো কিনে আমার পাশে থাকুক আমাকে সহযোগিতা করুন। নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে কিনতে চাইলেও কিনুন।

অনেকেই বলছেন শিল্পকর্ম কেনার সামর্থ্য নেই, কিন্তু পাশে থাকতে চাচ্ছেন, অনেকেই কল ইনবক্স করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট যুক্ত করতে বলেছেন। আমি লজ্জা বিসর্জন দিয়ে সেটা যুক্ত করলাম। তবুও অনুরোধ করব আমার শিল্পকর্মগুলো কিনুন।

তারিফকে সহযোগিতা করতে চাইলে বা শিল্পকর্ম কিনে সাহায্য করতে ইচ্ছুকদের জন্য তারিফ যে মোবাইল নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তার পোস্টে যুক্ত করে দিয়েছেন সেগুলো হলো নগদ/বিকাশ : ০১৭৬৫৮৯২৩৫৫, রকেট : ০১৭২৬৩৫৯২৩০-৪, সোনালী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর : ৫৪১২২০১০৩০৪১১, ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর : ২০৫০৩০১০২০১৭৩৫৮১৬, ডাচ্্-বাংলা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর : ৭০১৭৩৪১০০৫০৮২

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত