ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের পারদ বাড়ছেই। সংঘাতের পঞ্চম দিনেও একে অন্যের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে দুই দেশই। তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলে নতুন করে হামলা করেছে ইসরায়েল। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে। জবাবে মোসাদের কৌশলগত ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলের হামলার কারণে তেহরানের বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিসরসহ ২১ মুসলিম দেশ। কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এদিকে, আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যা করলেই সংঘাত থেমে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। একই সঙ্গে ইরানের নতুন শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ইরানে সরকার উৎখাতের চেষ্টা হবে একটি কৌশলগত ভুল। অন্যদিকে, ইরানের সঙ্গে আলোচনায় জেডি ভ্যান্স বা স্টিভ উইটকফকে পাঠাতে পারেন ট্রাম্প।
পঞ্চম দিনে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : টানা পঞ্চম দিনের মতো ইসরায়েল ও ইরান একে অন্যের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার উভয়পক্ষই তাদের আক্রমণ আরও বিস্তৃত করেছে। ইসরায়েলে মধ্যরাতের পর তেল আবিবে হামলার সাইরেন বেজে ওঠে এবং ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আবারও দেশটিকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের সংবাদমাধ্যম তেহরানের কেন্দ্রস্থলসহ বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনার খবর দিয়েছে। তাদের খবরে বলা হয়েছে, আন্দারজগৌ এলাকায় ইসরায়েলের গোলা আঘাত হেনেছে। ওদিকে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা এই প্রথম ‘এক ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র’ ব্যবহার করেছেন, যা ইসরায়েল প্রতিহত করতে অক্ষম। তিনি বলেন, অল্প কিছু দেশের হাতেই এ ধরনের উচ্চপ্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র আছে। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা সবশেষ হামলায় ৩০টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র ইরান ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছেন। তবে তারা বলেছেন, এর বেশিরভাগই তারা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছেন।
মোসাদের ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা : ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ভবনে মঙ্গলবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে ইরান। এ ছাড়া ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কার্যক্রম পরিকল্পনাবিষয়ক কেন্দ্রেও হামলা চালিয়েছে দেশটি। ইরানি সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজের এক প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। তবে এতে কতজন হতাহত হয়েছে, তা জানা যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের ইসলামি রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) নতুন এ হামলার দাবি করেছে। এ নিয়ে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে তারা। তাতে বলা হয়, আইআরজিসির ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ইন্টেলিজেন্স সেন্টারে এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কার্যক্রম পরিকল্পনাবিষয়ক সেন্টারের ভবনে আঘাত হেনেছে। এ নিয়ে সরাসরি কিছু জানানো হয়নি ইসরায়েলের পক্ষ থেকে। তবে তারা বলছে, হার্জলিয়া এলাকায় স্পর্শকাতর কিছু জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এ হামলা সামরিক স্থাপনায় হয়েছে বলে নিশ্চিত না করলেও তারা বলছে, এ ধরনের জায়গা প্রভাবিত হয়েছে। এ-সংক্রান্ত বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে। তাতে দাবি করা হচ্ছে, ইসরায়েলি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে ইরান। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভবনের চারপাশে ধোঁয়া উড়ছে।
ইসরায়েলকে থামাতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান ইরানের : ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাত বন্ধে পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান। সোমবার এক্সে এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি সত্যিই কূটনৈতিকভাবে সমাধানে আগ্রহী হন এবং এই যুদ্ধ থামাতে চান, তাহলে তার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো সে অনুযায়ী হবে। আব্বাস আরাগচি আরও বলেন, ইসরায়েলের অবশ্যই আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং আমাদের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা পুরোপুরি বন্ধ না হলে পাল্টা জবাব অব্যাহত থাকবে। ওয়াশিংটন থেকে একটি ফোনকলই নেতানিয়াহুর মতো কাউকে থামাতে পারে। আর সেটা কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুলে দিতে পারে। একাধিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, তেহরানের পক্ষ থেকে কাতার, সৌদি আরব ও ওমানকে অনুরোধ করা হয়েছে তারা যেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যাতে তিনি ইসরায়েলের ওপর তার প্রভাব খাটিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে উদ্যোগী হন। বিনিময়ে ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতা আলোচনায় নমনীয়তা দেখাবে। দুজন ইরানি এবং ওই অঞ্চলের তিনটি কূটনৈতিক সূত্র রয়টার্সকে এ কথাগুলো বলেছেন।
তেহরান ত্যাগের আহ্বান ট্রাম্পের : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের রাজধানী তেহরানের বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই তেহরানে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যেতে থাকে। ট্রাম্প তার প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে মন্তব্য করেন, সবার অতিসত্বর তেহরান ছেড়ে যাওয়া উচিত। তিনি তার পোস্টে উল্লেখ করেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না। জি-সেভেন সম্মেলনের জন্য সোমবার কানাডায় থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে।
যুদ্ধবিরতির চেয়েও বড় কিছু হতে যাচ্ছে ট্রাম্প : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, জি-৭ সম্মেলন থেকে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় অংশ নিতে তিনি আগেভাগে কানাডা থেকে ওয়াশিংটনে ফেরেননি। স্থানীয় সময় সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে তিনি এ দাবি করেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
যুক্তরাষ্ট্র জানে খামেনি কোথায়, কিন্তু এখনই ‘হত্যা’ নয় ট্রাম্প : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যা করব না, অন্তত এখনই (হত্যা) নয়।’ আলজাজিরার খবরে হয়েছে, মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রুথ সোশ্যালে ইরানকে ঘিরে কয়েকটি পোস্ট করেছেন। এর একটিতে ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র জানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ঠিক কোথায় লুকিয়ে আছেন।
ট্রাম্প লিখেছেন, “তিনি (খামেনি) সহজ লক্ষ্যবস্তু, তবে যে জায়গায় আছেন, নিরাপদ আছেন। আমরা তাকে ‘অপসারণ’ (হত্যা!) করব না। অন্তত এখনই না।” তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমরা চাই না বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বা মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হোক।’ এরপর হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প যোগ করেন, ‘আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।’
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে হামলা, নিহত ৩ : তেহরানে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রধান কার্যালয়ে ইসরায়েলের বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে। সোমবার সম্প্রচারকারী চ্যানেল আইআরআইবি জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় টেলিভিশনের তিনজন কর্মী নিহত হয়েছেন এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমায়েল বাঘায়ি এ হামলাকে নিকৃষ্ট কাজ এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সবচেয়ে বড় হত্যাকারী।
মিসরসহ ২১ মুসলিম দেশের নিন্দা : ইরানে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বিমান হামলার বিরুদ্ধে একযোগে নিন্দা জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার ২১টি আরব ও মুসলিম দেশ। তারা অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমন ও আন্তর্জাতিক আইন ও পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে নতুন করে প্রতিশ্রুতি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে। মিসরের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মেনার খবরে বলা হয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলআত্তির উদ্যোগে এবং বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা শেষে সোমবার এ যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়।
বিবৃতিটিতে সমর্থনকারী দেশগুলো হলো তুরস্ক, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, বাহরাইন, ব্রুনাই, চাদ, গাম্বিয়া, আলজেরিয়া, কোমোরোস, জিবুতি, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, ইরাক, ওমান, কাতার, কুয়েত, লিবিয়া, মিসর ও মৌরিতানিয়া। বিবৃতিতে ইরানি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করে তীব্র নিন্দা জানানো হয় বলে জানিয়েছে আনাদোলু বার্তা সংস্থা। বিবৃতিতে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও প্রতিবেশ নীতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আগুনে ঘি ঢালছেন ট্রাম্প চীন : চীন অভিযোগ করেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতে ঘি ঢালছেন। মঙ্গলবার বেইজিংয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের মন্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, আগুন উসকে দেওয়া, ঘি ঢালা, হুমকি দেওয়া এবং চাপ সৃষ্টি করা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সাহায্য করবে না, বরং সংঘাতকে আরও তীব্র ও বিস্তৃত করবে।
নাগরিকদের ইসরায়েল ত্যাগের নির্দেশ চীনের : চীনা নাগরিকদের ইসরায়েল ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে তেল আবিবে অবস্থিত চীনা দূতাবাস। গতকাল এক বার্তায় চীনা দূতাবাস তাদের নাগরিকদের উদ্দেশে বলেছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইসরায়েল ছাড়ুন। চীনা দূতাবাসের বার্তায় বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে তীব্র সংঘাত এখনো চলছে। ফলে ইসরায়েলে থাকা চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রয়োজনেই স্থল সীমান্ত দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইসরায়েল ছাড়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলের চীনা মিশন। চীনা দূতাবাস এ বিবৃতিটি উইচ্যাটে প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, চীনা নাগরিকদের অবিলম্বে জর্ডানের দিকে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ইরানের সঙ্গে আলোচনায় ভ্যান্স বা উইটকফ : ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বা মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফকে পাঠানোর কথা ভাবছেন। সিবিএস নিউজের এক সাংবাদিক এমনটাই জানিয়েছেন। এ সাংবাদিক ট্রাম্পের সঙ্গে একই উড়োজাহাজে (এয়ার ফোর্স ওয়ান) করে কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরছেন। সিবিএস নিউজের এ সাংবাদিক জানিয়েছেন, ভ্যান্স বা উইটকফকে পাঠানো হবে কি না, তা নির্ভর করছে ওয়াশিংটনে ফিরে তিনি কী পরিস্থিতি দেখতে পান তার ওপর।
ইরানে সরকার উৎখাতের চেষ্টা হবে কৌশলগত ভুল মাখোঁ : বলপ্রয়োগ করে তেহরানে সরকার পরিবর্তন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেছেন, তেহরানে সরকার উৎখাতের চেষ্টা হবে একটি কৌশলগত ভুল। সোমবার কানাডায় জি-৭ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, যারা মনে করেন বাইরে থেকে বোমা ফেলে কোনো দেশকে জোর করে উদ্ধার করা যায়, তারা বরাবরই ভুল করে এসেছেন।
খামেনিকে হত্যার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করছে ইসরায়েল : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে নিশানা করে হত্যার বিষয়টি উড়িয়ে দেননি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সোমবার তিনি বলেন, যা করা দরকার, আমরা তা-ই করছি। নেতানিয়াহু বলেন, আমি বিশদে যাব না, তবে আমরা এর আগে তাদের শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের টার্গেট করেছি। ওটা ছিল হিটলারের পারমাণবিক দল। খামেনিকে হত্যার মতো পদক্ষেপ সংঘাত বাড়াবে না, বরং শেষ করবে। সাক্ষাৎকারে ইরান থেকে আসা শান্তি আলোচনার বার্তাগুলোকেও তিনি গুরুত্ব দেননি। তার ভাষায়, তারা এসব ভুয়া আলোচনার মধ্য দিয়ে আমেরিকাকে ধোঁকা দেয়, সময়ক্ষেপণ করে। আমাদের কাছে তাদের প্রতারণার ব্যাপারে খুব নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য আছে।
ইরানের নতুন শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি : ইরানের যুদ্ধকালীন চিফ অব স্টাফ এবং দেশটির সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার হিসেবে পরিচিত মেজর জেনারেল আলি শাদমানিকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানিয়েছে, আকস্মিক সুযোগের মধ্যে তেহরানের কেন্দ্রস্থলে একটি স্টাফড কমান্ড সেন্টারে রাতারাতি হামলায় শাদমানি নিহত হয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। শাদমানি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অন্যতম ঘনিষ্ঠজন। এ ছাড়া ইরানের অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ড কোর-আইআরজিসির খাতাম আল-আনবিয়া সদর দপ্তরের প্রধান ছিলেন আলি শাদমানি। খাতাম আল-আনিবিয়া আইআরজিসির নির্মাণ ও প্রকৌশল শাখা। এর অধীনে আইআরজিসি ও সাধারণ সেনাবাহিনী উভয়কেই সমন্বয় করা হয়।