সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

ফেনীতে এখনো বন্ধ ৭৮১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 

আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫২ পিএম

ফেনীতে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত। এতে গত ২০ আগস্ট থেকে পাঠদান বন্ধ রয়েছে জেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজসহ ৯২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বন্যার পানি নামার সাথে সাথে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে পাঠদান শুরু করলেও এখনো ৭৮১টি কবে খুলবে সে ব্যাপারে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫৫৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৩টি, মাদরাসা ১২৮টি, কলেজ ৩০টি, কারিগরি, ডিপ্লোমা ও প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট ১০টি। বন্যায় প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই প্লাবিত হয়েছে। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ ভবনের নিচতলার শ্রেণীকক্ষ ও অফিস কক্ষের দরজা, জানালা, আসবাবপত্র টেবিল চেয়ার হাইবেন্স, লো ব্যান্স, আলমারি, কেবিনেট , কম্পিউটার, বৈদ্যুতিক লাইন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, টয়লেট ব্লক, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, মাঠ , সীমানা প্রাচীর নষ্ট হয়েছে।

দাগনভূঞার সাপুয়া হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নাহার বলেন, ‘বন্যার পানি ঘরে প্রবেশ করে বই-খাতাসহ সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এবার বিভিন্ন সময় টানা স্কুল বন্ধ থাকায় ঠিকভাবে সিলেবাস শেষ করা যায়নি। কিছুদিন পর প্রস্তুতি ছাড়াই আমাদের নির্বাচনী পরীক্ষায় বসতে হবে।’

পরশুরাম উপজেলার সামিয়া আনজুম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করায় অন্যত্র গিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। ঘরে থাকা বইপত্র কিছুই বাঁচানো যায়নি। এ পরিস্থিতিতে স্কুল কবে খুলবে সেটাও জানি না।’

আতাতুর্ক সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোবারক হোসেন বলেন, ‘বন্যার সময়ে বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া কয়েকটি পরিবার এখনো অবস্থান করছে। কবে থেকে পাঠদান শুরু হবে তা অনিশ্চিত।’

ফেনী সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের কোনো শ্রেণিকক্ষ এখন কার্যক্রম পরিচালনার উপযোগী নয়। সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা চলছে।’

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফী উল্লাহ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোতে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়েও তালিকা হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানকে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বন্যার সময় জেলার ৫৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো পাঠদানে অনুপযোগী হয়ে আছে। শহর এলাকার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাদের আগামীকাল শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ পর্যায়ে যে সমস্ত শিক্ষার্থীদের বইপত্র নষ্ট হয়ে গেছে স্কুলগুলোকে এদের সাথে কথা বলে তালিকা প্রণয়ণের জন্য বলা হয়েছে। তালিকা হাতে পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হবে। আগামী সপ্তাহ থেকে কিছু বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বলেন, ‘যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পানি নেমে গেছে ধীরে ধীরে সেগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে। যেগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত