শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

চসিকের ২১৪৫ কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, ০৫:১৮ পিএম

আগামী অর্থবছরের জন্য চারটি পরিকল্পনা ঘোষণা এবং নগরের অন্যতম বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনকে গুরুত্ব দিয়ে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ১৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকার বাজেট  ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাজেট  ঘোষণা করেন সিটি  মেয়র ডা. শাহাদাত  হোসেন। গত বছরেরর নভেম্বরে  মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম বাজেট ঘোষণা করলেন ডা. শাহাদাত  হোসেন। বাজেটে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বিশেষ গুরুত্ব  দেওয়া হয়েছে। এ খাতে ৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সর্বশেষ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৩ কোটি টাকা। যদিও শেষ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ২২  কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

জলাবদ্ধতা নিরসনে  নেওয়া কার্যক্রম প্রসঙ্গে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন,  ‘১৯টি খাল  থেকে ১০ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪১ লাখ ঘনফুট মাটি ও আবর্জনা অপসারণ করা হয়েছে। নালা-নর্দমা পরিষ্কারে ৫  কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বর্ষায় আরও ২০০টি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। মশক নিধনে আধুনিক পদ্ধতি ও আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড ব্যবহার শুরু হয়েছে।’ জলাবদ্ধতা নিরসনে আগ্রাবাদ বক্স কালভার্ট পরিষ্কারে  নৌবাহিনীকে দিয়ে ২  কোটি ২০ লাখ টাকার কাজ চলমান বলে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘চলতি  মৌসুমে অতিবৃষ্টিতেও জিইসি, বহদ্দারহাট, চকবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো তলিয়ে যায়নি। 

বাজেট অধিবেশনে  মেয়র ডা. শাহাদাত  হোসেন আরও বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অবৈধ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার  দোসরদের পতনের পর মাননীয় আদালত কর্তৃক সুবিচারপ্রাপ্ত হয়ে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছি। তাই নগরবাসীর আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটানোর প্রত্যাশা এবং মহানগরীকে ক্লিন-গ্রিন, হেলদি ও  সেফ সিটি, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ও অর্থনৈতিকভাবে বাসযোগ্য নান্দনিক পর্যটন নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’ অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও  ঘোষণা করেন মেয়র। এর পরিমাণ ১ হাজার ২২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। যদিও মূল বাজেট ছিল ১ হাজার ৯৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থাৎ বাজেট বাস্তবায়নের হার ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

আগামী অর্থবছরের জন্য সুনির্দিষ্ট চারটি পরিকল্পনা হচ্ছে সিটি করপোরেশনে চলমান নিয়োগ কার্যক্রম সম্পাদন, দক্ষ জনবল গড়ার লক্ষ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, বর্তমান কাজের পরিধি ও ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় নতুন জনবল সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়ন করে অনুমোদনের ব্যবস্থা করা এবং বিভিন্ন সেবা কার্যক্রমসহ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ। জানা গেছে, মোট বাজেটের মধ্যে ১ হাজার ৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা নিজস্ব উৎস  থেকে আয় করার পরিকল্পনা রয়েছে করপোরেশনের। আর অনুদান খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯২ কোটি ৫ লাখ টাকা। এদিকে দায়িত্ব গ্রহণের সময় মোট ৫৯৬ কোটি টাকা দেনা থাকার কথা জানিয়ে  মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘গত ৮ মাসে ধারাবাহিকভাবে পরিশোধের পর এখন করপোরেশনের  দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০০  কোটি টাকা।’

বাজেটে মোট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে ৬৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে  বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় হবে ৩৩৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৪৫  কোটি টাকা। ৯টি প্রকল্পসহ সিটি করপোরেশনের রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কার, বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ খাতে এই টাকা খরচ করা হবে। এ ছাড়া দেনা পরিশোধে ব্যয় করা হবে ১৪৯ কোটি টাকা। তবে বাজেটে মশকনিধন খাত গুরুত্ব পেয়েছে কম। আগামী অর্থবছরের জন্য নগরের মশকনিধন খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৯  কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে ৮  কোটি টাকা বরাদ্দ  রেখেছিল সিটি করপোরেশন। অবশ্য খরচ করে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত